বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত, হোক-না আজই ভালোবাসা

অনলাইন ডেস্ক | আপডেট: সোমবার, ফেব্রুয়ারী ১৪, ২০২২

ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত, হোক-না আজই ভালোবাসা
ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত। আজ পহেলা ফাল্গুন। এসেছে বসন্ত। নাগরিক জীবনে ফুলের দেখা মিলেছে কি? শহুরে যাপনে কানে কি বেজেছে কোকিলের ডাক? বিশ্ব ভালোবাসা দিবসও আজ। বসন্ত আগমনের এ বিশেষ দিনকে কেন্দ্র করে ছুটে চলছে মানুষের জীবন।

কখনো খুব নীরবে, কখনো মর্মর শব্দ তুলে একদিকে ঝরে পড়ে ধূসর পাতা, অপরদিকে গাছে গাছে জেগে উঠেছে কচি সবুজেরা। কোনো এক গাছের আড়াল থেকে ডেকে উঠছে কোকিল। প্রকৃতির এসব আয়োজন দেখেই মানুষের জানা হয়ে যায়–বসন্ত এসে গেছে।

'ওরে ভাই, ফাগুন লেগেছে বনে বনে–/ ডালে ডালে ফুলে ফলে পাতায় পাতায় রে,/ আড়ালে আড়ালে কোণে কোণে'। তাই নগরের প্রকৃতিতে না থাকুক, পথে পথে আজ ঢল নেমেছে লাবণ্যময় বসন্তের। নাগরিকদের চোখেমুখে ফুটে-ওঠা খুশির আভা, বর্ণিল বসন আর আকাশ-বাতাসে ছড়িয়ে পড়া নম্রতাই বলে দিচ্ছে, আজ পহেলা ফাল্গুন–বসন্তের প্রথম দিন। আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি, ভালোবাসার তরি বাইছেন সেন্ট ভ্যালেন্টাইন।
 
ফুল প্রকৃতির এমন রূপ মেলে-ধরা সময়ে দেখা মেলে তরুণী পূর্বার চোখে। প্রিয়জন থাকে হাজার মাইল দূরে। তাই বলে কি দেখার আকাঙ্ক্ষা কমে? বরং বেড়ে-চলা সেই আকাঙ্ক্ষার পূর্ণতা দেওয়ার চেষ্টা অন্তর্জালে। এ যেন দূরে থেকেও কাছে আসার বাস্তব রূপায়ণ।

হয়তো এমনই এক পূর্বার গল্পের পূর্ণতা মেলে এক দম্পতির কাছে এসেও। একসঙ্গে কাটিয়েছেন গুনে গুনে তিন দশক। দীর্ঘ এই পথচলার একমাত্র পুঁজি ভালোবাসা। কথা ছিল কেউ পাশে না-থাকলেও হাল ছাড়বেন না। শক্ত হাতে এগিয়েছেন শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে। দিনশেষে প্রাপ্তি কী? ভালোবাসা।
 
বছরের শ-তিনেক দিনের মধ্যে পঞ্জিকা ঘাঁটলে দেখা যাবে কোনো-না-কোনো দিবস বা উৎসব ওই দিনটিকে দখল করে রেখেছে। তার মধ্যে একটি দিন ফেব্রুয়ারির ১৪। পুরো পৃথিবী ঘটা করে পালন করে ভালোবাসা দিবস। এদিকে, বাংলা ক্যালেন্ডারের আবর্তনের ফলে বিগত বছর ধরে এ একই তারিখে পালন হচ্ছে পহেলা ফাল্গুন বা বসন্তের প্রথম দিন।

বিশেষ কোনো দিবসকে কেন্দ্র করে কিংবা প্রতিটি দিনকে বিশেষ দিবসে রূপান্তরিত করে শুদ্ধতম ভালোবাসার আর কল্যাণের চর্চাই কাম্য সবার।

বসন্ত উৎসব: প্রতিবছরের মতো এবারও ‘বসন্ত উৎসব’ পালন করছে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদ্‌যাপন পরিষদ। সোহরাওয়ার্দী পার্কে শিল্পকলার উন্মুক্ত মঞ্চে আজ সোমবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে উপমহাদেশীয় ধারার এসরাজ বাদ্যযন্ত্রনির্ভর বাসন্তী রাগ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এ উৎসবের শুভসূচনা হয়। শেষ হবে সকাল ১০টায়। এতে বসন্ত কথন পর্বে অংশ নেন সংগঠনের সভাপতি স্থপতি সফিউদ্দিন আহমেদ, সভাপতি কাজল দেবনাথ ও সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট। কোভিড-১৯-এর কারণে এবারের উৎসব হয় সীমিত পরিসরে। তাই এবার বসন্ত উৎসব হচ্ছে না উত্তরা, ধানমন্ডি রবীন্দ্রসরোবর ও পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে।

ভালোবাসা দিবসের কথা: বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বা সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে নিয়ে ইতিহাসের পাতায় রয়েছে নানা কাহিনি। এগুলোর মধ্যে বহুল প্রচলিত কাহিনিটি হচ্ছে, রোমান পাদ্রি সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে খ্রিষ্টধর্ম প্রচারের অভিযোগে ২৭০ সালে মৃত্যুদণ্ড দেন রোমের দ্বিতীয় ক্লডিয়াস। তিনি কারাগারে বন্দি থাকার সময় ছোট ছেলেমেয়েরা তাকে ভালোবাসার কথা জানিয়ে জানালা দিয়ে চিঠি ছুড়ে দিত। বন্দি সেন্ট ভ্যালেন্টাইন চিকিৎসা করে জেলারের মেয়ের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেন। এভাবে মেয়েটির সঙ্গে তার যোগাযোগ ঘটে। মারা যাওয়ার আগে মেয়েটিকে পাঠানো চিঠির শেষে তিনি লিখেছিলেন, ‘ফ্রম ইওর ভ্যালেন্টাইন।' অনেকে মনে করেন, এই সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের নামানুসারেই প্রথম জুলিয়াস ৪৯৬ খ্রিষ্টাব্দে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে 'সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে' হিসেবে ঘোষণা করেন। এ ছাড়াও এক ভ্যালেন্টাইনের নাম পাওয়া যায় ইতিহাসে। যুদ্ধের জন্য দক্ষ সৈনিক সংগ্রহের জন্য রোমান সম্রাট ক্লডিয়াস যুবকদের বিয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। কিন্তু তরুণ এই ভ্যালেন্টাইন নিয়ম ভঙ্গ করে প্রেম ও বিয়ে করেন। এ কারণে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন তিনি।
0 Comments