বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোংলায় নিজ ঘর থেকে যুবতীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, স্বামী আটক

অনলাইন ডেস্ক | আপডেট: রবিবার, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২

মোংলায় নিজ ঘর থেকে যুবতীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, স্বামী আটক
মোংলায় পিতা-মাতার অমতে বিয়ের ৪ মাসের মাথায় ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় এক যুবতীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মোংলা পোর্ট পৌর শহরের ছত্তার লেন এলাকার মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়ির একটি কক্ষ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের পরিবারের অভিযোগে স্বামী মহসিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 
পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, পোর্ট পৌর শহরের শ্রম কল্যাণ সড়কের বাসিন্দা বাবুল হোসেনের ছোট মেয়ে বর্নালী (২০) কে জোর পূর্বক বিয়ে করেন মাদ্রাসা রোডের বাসিন্দা এনামুল খাঁনের ছেলে মহসিন খাঁন। তারা দু’জনেই শহরের ছত্তার লেন এলাকার মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়িতে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে গোপনে বসবাস করতেন। তবে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বর্নালীকে বিয়ে করার কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি মহসিন। গতকাল শনিবার সকালে দু’জনের মধ্যে পারিবারিক সমস্যা নিয়ে বাক-বিতন্ডা হলে স্বামী মহসিন স্ত্রী বর্নালীকে মেরে ঘরে আটকে রেখে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে চলে যান। পরে কৌশলে মহসিন তার স্ত্রীর মোবাইল ফোন আনার জন্য শ্যালক জুবায়ের হোসেন মারুফকে (১৪) ওই ঘরে পাঠান বলে অভিযোগ নিহত বর্নালীর পরিবারের। পরে দরজা খুলে বর্নালীর লাশ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলতে দেখেন তারা। 
নিহত বর্নালীর ছোট বোন ও মা গোলজান বিবির দাবি, স¤প্রতি বর্নালী ও মহসিনের একসাথের একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে বর্নালী। ওই সময় থেকেই এ নিয়ে আগের স্ত্রীর সাথে মহসিনের ঝগড়া হয়। সেই রাগে মহসিন শনিবার বর্নালীকে বেধড়ক মারধর করে ঘরের দরজা আটকে অন্যত্র চলে যায়। তবে এ ঘটনার জন্য মহসিনই পুরোপুরি দায়ী, আমরা এর সঠিক বিচার চাই বলে দাবি বর্নালীন স্বজনদের। 
থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেছে। এ ঘটনায় স্বামী মহসিনকে আটক করা হয়েছে তবে বিয়ে ও কিশোরীর গলায় ফাঁস লাগানো ঘটনা নিয়ে পরিবারসহ এলাকাবাসীর ভিন্ন ভিন্ন মত থাকায় আরো অধিকতর তদন্ত ও আসল ঘটনা উদ্ঘাটনের জন্য রাতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানায় পুলিশ। 
বর্নালীর জমজ বোন বাবলী (২০) ও বড় বোন সুইটি (২৩) বলেন, মহসিনের আগের বউ আছে। তারপরও ৪ মাস আগে আমাদের বোনকে জোর পূর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে বিয়ে করে মহসিন। প্রায়ই বর্নালীকে মারধর করতো মহসিন। কিছুদিন আগেও মহসিন বর্নালীকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়। এ ঘটনার জন্য মহসিনই পুরোপুরি দায়ী, আমরা এর সঠিক বিচার চাই বলে জানায় দুই বোন।  
এদিকে খবর পেয়ে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোংলা সার্কেল মোঃ আসিফ ইকবাল ও মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং মহসিনকে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের আটক করেন। তবে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বর্নালীকে বিয়ে করার কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি মহসিন। বর্নালীর লাশের আঘাতের কোন চিহ্ণ না থাকায় ঘটনাস্থল থেকে প্রথম পর্যায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে পুলিশ মহসিনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। রবিবার সকালে বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছেন ওসি।
0 Comments