বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সন্তানের অর্জন-আনন্দে শরিক হলেন মা-বাবা

অনলাইন ডেস্ক | আপডেট: শনিবার, নভেম্বর ১৯, ২০২২

সন্তানের অর্জন-আনন্দে শরিক হলেন মা-বাবা
ভর্তির পর চার বছর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে শেষ হয় গ্র্যাজুয়েশন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গ্র্যাজুয়েটদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেওয়ার মধ্যদিয়ে স্বীকৃতি মেলে শিক্ষার্থীদের। সমাবর্তনের মাধ্যমে প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নেয় শিক্ষার্থীরা।

৫৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানকে ঘিরে গত কয়েকদিন ধরে ঢাবি ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে আনন্দ-উচ্ছ্বাস। গ্র্যাজুয়েটরা সমাবর্তনের গাউন পরে বন্ধু, সহপাঠী, পরিচিতদের নিয়ে সেইসব স্মৃতি ফ্রেমবন্দি করে রাখছেন । কেউ কেউ তাদের বাবা-মাকে ক্যাম্পাসে নিয়ে এসেছেন।

অভিভাবকদের উপস্থিতি শিক্ষার্থীদের আনন্দে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। তাদের সঙ্গে ক্যামেরাবন্দি হয়ে মুহূর্তগুলো স্মরণীয় করে রাখছেন গ্র্যাজুয়েট সন্তানরা। কেউ কেউ মা-বাবার গায়ে জড়িয়ে দিচ্ছেন গাউন, হ্যাট। তাদের নিয়ে ঘুরছেন পুরো ক্যাম্পাস। ছেলে-মেয়ের এমন অর্জনে মুখে হাসির কমতি নেই মা-বাবাদের।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, এমন একটি দিনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তারা। মা-বাবাকে নিয়ে ক্যাম্পাসে ঘোরা এবং সমাবর্তন নেওয়া তাদের স্বপ্ন। মা-বাবারাও বলছেন, আজ তাদের গর্বের দিন। সন্তানের সমাবর্তনে অংশ নিয়ে আনন্দের সীমা নেই তাদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে দেখা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাবর্তন নেওয়া ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদের সঙ্গে। সমাবর্তনে তিনি কিশোরগঞ্জ থেকে বাবা-মাকে নিয়ে এসেছেন। অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মা-বাবাকে আগেই বলেছি সমাবর্তনে আসতেই হবে। তাদের নিয়ে আসতে পেরে গর্ববোধ করছি। আমার আনন্দ বেড়ে গেছে হাজারগুণ। তাদের নিয়ে পুরো ক্যাম্পাস ঘুরছি।’

উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে আসিফের মা পারভীন আক্তার বলেন, ‘ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করার পর থেকেই স্বপ্ন ছিল তার সমাবর্তনে যাব। আমার যে আজ কত খুশি লাগছে বুঝাতে পারব না। আমার আজ স্বপ্ন পূরণের দিন।’

আসিফের বাবা বলেন, ‘আমি নিজেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলাম। কিন্তু গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর আর তেমন আসা হয়নি। ছেলের সমাবর্তন উপলক্ষে মাসখানেক আগে থেকেই এই প্রস্তুতি ছিল। আমি নিজে সমাবর্তন নেয়নি, কিন্তু ছেলের সমাবর্তনের এসেছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে দেখা হয় পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী জাকিয়া তাসনিমের সঙ্গে। সমাবর্তনে তিনি গ্রাম থেকে বাবা-মাকে নিয়ে এসেছেন। জাকিয়ার বাবা আজমল হোসেন মেয়ের সমাবর্তনে ক্যাম্পাসে আসার অনুভূতি জানিয়ে বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে, নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে। নিজ চোখে মেয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান দেখা অনেক আনন্দের।'

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী তুষার হাসান বলেন, ‘আমার শিক্ষা জীবনের একটি স্মরণীয় দিন আজ। বাবা-মা নিয়ে ক্যাম্পাস ঘুরার স্বপ্ন ছিল সেটি আজ পূরণ হলো। বিশেষ দিবে মা-বাবা আমার কাছে এটি খুবই ভালো লাগছে। তাদের গাউন ও হ্যাট পরিয়ে ছবি তুলেছি। আমার গ্র্যাজুয়েট হওয়ার সবচেয়ে বড় অবদান আমার মা-বাবার।’

তুষারের মা আকলিমা আক্তার বলেন, ‘আজ আমার সন্তানের লেখাপড়া শেষ। আজ থেকে আমি বলতে পারব আমার সন্তান গ্র্যাজুয়েট। এই অনুভূতি অনেক আনন্দের। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।'
0 Comments