শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
৭ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আজ ভারতের অবস্থান হস্তক্ষেপ হলে একাত্তরে কী ছিল, প্রশ্ন কাদেরের

অনলাইন ডেস্ক | আপডেট: শনিবার, আগস্ট ১৯, ২০২৩

আজ ভারতের অবস্থান হস্তক্ষেপ হলে একাত্তরে কী ছিল, প্রশ্ন কাদেরের
বাংলাদেশের ব্যাপারে ওয়াশিংটনকে নয়া দিল্লির দেওয়া কূটনৈতিক বার্তাকে আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে যে অভিযোগ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর করেছেন তা নাকচ করে দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এটাকে আভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপ মানতে নারাজ তিনি। তার যুক্তি, এটাকে আভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপ বললে একাত্তর সালে ভারত যে বাংলাদেশের সহায়তায় এগিয়ে এসেছিল সেটাকে কী বলবেন।  

আজ শনিবার (১৯ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ডেঙ্গু বিষয়ে এক সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপকমিটি রবীন্দ্র সরোবরে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারত হস্তক্ষেপ করছে’ এমন অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা এই সম্পর্কে কোনো কথা বলতে চাই না। ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। পঁচাত্তরে আমরা ক্ষমতা হারিয়েছি, তখন তো ভারত আমাদের ক্ষমতা বসিয়ে দেয়নি। ২০০১ সালে আমাদের ক্ষমতা চলে গেছে, জনগণ চাইলে আমরা ক্ষমতায় থেকে চলে গেছি। সেটাই বলব- এক কথা। ষড়যন্ত্রের বিষয় তো আছে। নির্বাচনের ব্যাপারে ভারত বা কোনো বিদেশি শক্তি কাউকে ক্ষমতায় বসাবে, ক্ষমতাচ্যুত করবে, যারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে, তাদের এমন মন্তব্য করা অশোভন।’

কাদের বলেন, ‘যারা ভারতের হস্তক্ষেপ বলেন তাহলে একাত্তর সালে কী হয়েছিল? ভারত আমাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল, তাদের সৈন্যরা রক্ত দিয়েছে, আমাদের লোকজনকে শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে, অস্ত্র দিয়েছে, ট্রেনিং দিয়েছে, সেটা কি অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ নয়?’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ভারতের ভূখণ্ডে গিয়ে জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা হয়েছিলেন, সেটা কার হস্তক্ষেপ? অভিন্ন ইস্যু, আজকে আঞ্চলিক রাজনীতিতে ভারত ও আমেরিকার এই ভূখণ্ডে অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। অভিন্ন স্বার্থের বিষয়ে তারা একে অন্যকে স্মরণ করিয়ে দিতে পারেন। বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে, নির্বাচনের বিষয়ে, ভারত একবারও বলেনি যে, তারা অমুককে চায়। অমুককে চায় না।’

বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের ক্ষমতায় বসাবে বাংলাদেশের জনগণ। বিএনপি অবশ্য কারো দিকে তাকিয়ে নেই। বিএনপি তাকিয়ে আছে শুধু আমেরিকার দিকে। কখন নিষেধাজ্ঞা আসবে, কখন ভিসানীতি আসবে, ভিসানীতি আর নিষেধাজ্ঞার কথা ভেবে ভেবে আটলান্টিকের ওপারে তাকাতে তাকাতে চোখের পাওয়ার কমে গেছে। এখন আর তাকিয়ে কিছু দেখতে পায় না। কেন ভিসানীতি আসে না? কেন নিষেধাজ্ঞা দেয় না? এসব চিন্তা করে করে ফখরুলের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ওসব বিষয় নিয়ে আমরা মাথা ঘামাই না। আমরা পাবলিকের দিকে তাকিয়ে আছি। আমাদের পাবলিক ক্ষমতা রাখলে আমরা থাকব। পাবলিক না রাখলে আমরা চলে যাব।’


সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশে পাচার করা অর্থ নিয়ে চিন্তায় নাকি আমরা বিভোর৷ বিদেশে অর্থপাচার কারা করেছে, সেটা ধরা পড়ে গেছে, এফবিআই সাক্ষ্য দিয়েছে। মামলায় দণ্ডিত তাদের নেতা বিদেশে পালিয়ে গেছে। কথায় কথায় পলায়নের কথা বলে ফখরুল এবং মির্জা আব্বাস। লজ্জা করে না? আপনাদের দলের এখন যিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান তিনি তো দণ্ডিত পলাতক। পলাতক নেতাই হলো আপনাদের তারেক রহমান। আমরা পালাব কেন? কোথায় পালাব? আমরা কোথাও পালাব না। পালিয়েছেন আপনারা, ওই কথার জবাব দেন।’


আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারেক রহমানের কেন সৎসাহস নেই, দেশে এসে আন্দোলনে করে আপনাদের এক দফার বাণী প্রচার করতে? এই কাপুরুষ, এই ভীরু, পলাতক নেতার নেতৃত্বে রিমোট কন্ট্রোলে আন্দোলন বাস্তবায়িত হয়নি, রিমোট কন্ট্রোল আন্দোলন বাংলাদেশ হয় না।’


ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা কর্মসূচি অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট চিকিৎসক ও সংসদ সদস্য ডা. প্রাণ গোপালের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।
0 Comments