পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানির শর্ত থেকে সরে দাঁড়িয়েছে ভারত। অবিলবিলম্বে তা কার্যকর হবে। আজ শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এমন তথ্য জানিয়েছে দ্য ইকোমিক টাইমস। এতে বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা হলেও কমে আসতে পারে মনে করছেন অনেকে। যদিও ব্যবসায়ীরা বলছেন ভিন্ন কথা।
ভারতীয় গণমাধ্যমটি বলছে, শুক্রবার জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সরকার তাৎক্ষণিকভাবে পেঁয়াজ রপ্তানির ন্যূনতম রপ্তানি শর্ত প্রত্যাহার করেছে। চলতি বছরের মে মাসে দেশটির মোদী-নেতৃত্বাধীন সরকার পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল, তবে ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য বেঁধে দিয়েছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রপ্তানিকারকরা আগস্টে ইটিকে জানিয়েছেন, জুন মাসে ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি ৫০ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে বলে অনুমান করা হয়েছে। কারণ প্রতি টন ন্যূনতম সাড়ে পাঁচশ ডলার রপ্তানি মূল্য এবং ৪০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক মিলিত হয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতিযোগিতার বাজারে বেশি ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে।
৩১ জুলাই পর্যন্ত চলতি অর্থবছরে (২০২৪-২৫) মোট দুই দশমিক ৬০ লাখ টন পেঁয়াজ রপ্তানি হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত ১৭ দশমিক ১৭ টন পেঁয়াজ রপ্তানি করেছে।
এদিকে হিলি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দাম কমা নিয়ে খুব একটা আশাবাদী না স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারকরা। তারা জানান, শুধু এলসি মূল্য কমালে হবে না, তার সঙ্গে পেঁয়াজ আমদানি করতে ভারত সরকারকে প্রতি মেট্রিকটনে যে ৪০ শতাংশ শুল্ক দিতে হয় সেটাও প্রত্যাহার করতে হবে। এ ছাড়া আমদানি করে দাম কমের সম্ভাবনা থাকবে না।
আমদানিকারকরা জানান, গত ডিসেম্বরে প্রথম পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত সরকার। এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল ৩১ মার্চ পর্যন্ত। কিন্তু তারপর অনির্দিষ্টকালের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়। প্রায় ছয় মাস পর এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে গত ৪ মে থেকে পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য (মিনিমাম এক্সপোর্ট প্রাইস-এমইপি) নির্ধারণ করে ৫৫০ মার্কিন ডলার। এরপর থেকে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে।
বন্দরের পেঁয়াজের আমদানিকারক শহীদুল ইসলাম জানান, পাকিস্তান, মিশর, তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। দেশে এ কারণে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে। ফলে দেশে ভারতের পেঁয়াজের চাহিদা কমে গেছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। বিষয়টি ভারত সরকার বুঝতে পেরে এবং তাদের কৃষকদের চাপে পেঁয়াজের নির্ধারিত এলসি ৫৫০ মার্কিন ডলার প্রত্যাহার করেছে। বাংলাদেশের আমদানিকারকরা তাদের পেঁয়াজের মান দেখেশুনে দামদর ঠিক করে ২০০-৩০০ ডলারের মধ্যে আমদানি করতে পারবেন। তবে, আমরা চাচ্ছি পেঁয়াজ আমদানি করে আনতে ভারতকে যে ৪০ শতাংশ শুল্ক দিতে হচ্ছে সেটাও যেন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তাহলে দেশে ভারতের পেঁয়াজের দাম কমে ৬০ টাকার কাছাকাছি আসবে।