স্বপ্নীল হকঃ
খুলনার পশ্চিম রূপসাঘাট এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী রমজান আলী হাওলাদার। সে জড়িত ছিলো আওয়ামী রাজনীতির সাথে। রমজান আলী হাওলাদারের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে অনেকটা বেগবান করেছে ২২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সাধারন সম্পাদক পদ। গত দু’যুগে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে হয়েছেন কোটিপতি। বিলাসবহুল বাড়ি থেকে শুরু করে খুলনা শহর ও বাইরে বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে কোটি টাকার সম্পত্তি। পরিবারের বেশ কিছু উচ্ছৃঙ্খল সদস্যদের নিয়ে ও আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় রূপসা এলাকায় সৃষ্টি করেন ত্রাসের রাজত্ব। সাবেক সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকসহ আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতার সহযোগিতায় চালিয়েছে লুটপাট, ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড।
১৯৯৬ সালে স্থানীয় রূপসা ইস্পাহানি লেনের এক বিল্ডিং-এ দারোয়ানের চাকুরি করতো এই রমজান আলী হাওলাদার। পরে ১৯৯৮ সালে রূপসা ফেরীঘাটে লেবারের কাজ করতো। পরবর্তী বছরে রূপসা সন্ধ্যা বাজারে ফুটপাত দখল করে মাছ বিক্রি শুরু করে। শুরু হয় তার নানা অনৈতিক কর্মকান্ড। মাছ বিক্রির পাশাপাশি রাতে অপরাধমূলক কাজে অংশগ্রহণ করতো রমজান।
গত কয়েক বছরে সম্পদের পাহাড় গড়েছে রমজান ও তার পরিবারের সদস্যরা। রূপসার দবির উদ্দিন সড়ক পাইকারি কাঁচা বাজারের পশ্চিম পাশে একটি তিনতলা বাড়ি করেছে রমজান আলী হাওলাদার। যার দাম কোটি টাকার বেশি। এছাড়াও সোনাডাঙ্গায় রয়েছে একটি বাড়ি।
এদিকে বাগেরহাটের দেপাড়া এলাকায় ১শ’ বিঘা জমি কিনে বাগান বাড়ি করেছে রমজান। সেখানে আরো রয়েছে মাছের ঘেরও। দেপাড়া মেইন রোড সংলগ্ন এলাকায় একটি বিলাসবহুল বাড়ির মালিক এই রমজান। সেখানে খরচ করেছে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা।
রমজার আলীর বিরুদ্ধে রয়েছে জমি দখলের অভিযোগও। রূপসা বাজারের পেরিফেরীভুক্ত তোয়া বাজারের ৩ বিঘা জমি রমজান আলী ও রজব আলী উকিল সমান ভাগে ভাগ করে এমন অভিযোগ রয়েছে। সেখানে ঘরবাড়ি ও দোকান ঘর নির্মাণ করে তারা অনেক টাকা উপার্জন করে বলে জানা যায়।
একই অবস্থা রমজান আলীর ভাই খেলাফতের। আওয়ামী নেতাদের ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের রাজত্ব গড়েছে সে। রূপসার সন্ধ্যা বাজার দখল, দখল করা দোকান বিক্রি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির টাকায় সে বানিয়েছে কোটি টাকার সম্পদ। রূপসায় তার নিজস্ব বাড়ি ছাড়াও নগরীর লবণচরা মাথাভাঙ্গা এলাকায় তার রয়েছে ১ বিঘা জমি। যার দাম কোটি টাকার বেশি।
স্থানীয়রা জানান, রমজান এক সময় ছিলো দারোয়ান, রূপসা ঘাটে করেছে শ্রমিকের কাজ। হঠাৎ করে তার আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার ঘটনা সবাই দেখেছে। এলাকায় সব ধরনের অপকর্ম করে তারা কোটি-কোটি টাকা আয় করেছে। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাকে মেরে এলাকা ছাড়া করা হতো। তাদের ব্যাপারে কোনো অভিযোগ করতে পারেনি কেউ। নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড ছিলো তার নিত্যদিনের খেলা। নানা অপরাধে জড়িত রমজান ও তার সহযোগীদেরকে আটক করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান স্থানীয়রা।