বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪
২৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সম্প্রীতি বজায় রাখতে সেনাবাহিনী সদা প্রস্তুত : সেনাপ্রধান

অনলাইন ডেস্ক | আপডেট: শনিবার, নভেম্বর ৯, ২০২৪

সম্প্রীতি বজায় রাখতে সেনাবাহিনী সদা প্রস্তুত : সেনাপ্রধান
স¤প্রীতি বজায় রেখে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে থেকে একে অপরের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে সবার প্রতি আহŸান জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি বজায় রাখতে এবং শান্তিপূর্ণ উৎসব উদযাপন নিশ্চিতে সেনাবাহিনী সদা প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।  
শুক্রবার বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের উদ্যোগে আয়োজিত শুভ কঠিন চীবর দান ও জাতীয় বৌদ্ধধর্মীয় মহাসম্মেলন-২০২৪ উপলক্ষে ঢাকার মেরুল বাড্ডায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শনকালে সেনাপ্রধান এ আহŸান জানান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি বজায় রেখে প্রতিটি ধর্মের নিজ নিজ উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে উদ্যাপনের লক্ষ্যে সেনাবাহিনী প্রয়োজনীয় সব কার্যক্রম গ্রহণে সদা প্রস্তুত।
একই সঙ্গে তিনি স¤প্রীতির দেশ গঠনের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে থেকে একে অপরকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহŸান জানান।  
পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় উলে­খযোগ্য ভূমিকা রাখার জন্য অনুষ্ঠানে আগত ঢাকার বিদেশি মিশনের ক‚টনীতিকদের ধন্যবাদ জানান।
সেনাবাহিনী প্রধান পার্বত্য জেলাসমূহে শান্তি ও স¤প্রীতির উন্নয়ন ঘটিয়ে সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে পার্বত্য এলাকায় বসবাসরত পাহাড়ি ও বাঙালিদের সচেষ্ট থাকতে অনুরোধ করেন।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, পার্বত্য জেলাসমূহে অধিকতর স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হলে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা তাদের দক্ষতাকে দেশে ও বিদেশে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হবে।
সবশেষে তিনি সারা দেশব্যাপী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের আয়োজিত অনুষ্ঠানসমূহ শান্তিপূর্ণভাবে উদ্যাপনের লক্ষ্যে সেনাবাহিনীসহ সব আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করায় বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
সেনাবাহিনী প্রধান সবাইকে শুভ কঠিন চীবর দান উপলক্ষে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। সেই সঙ্গে পার্বত্য জেলাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান হতে আগত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
সেসময় সেনাবাহিনী প্রধান তিন পার্বত্য জেলায় শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা ও কঠিন চীবর দান উদযাপন উপলক্ষে আর্থিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা প্রদানের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।


এ ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে উৎসবসমূহ পালন করার জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সব কার্যক্রম গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন।


এরই ধারাবাহিকতায় সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের অনুক‚লে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ হতে এক কোটি টাকার চেক অনুদান হিসেবে প্রদান করেন।


পরিদর্শনের সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ ও জিওসি ৯ পদাতিক ডিভিশন উপস্থিত ছিলেন।


এছাড়া অনুষ্ঠানের সভাপতি শাসনস্তম্ভ ভদন্ত ধর্মপ্রিয় মহাথের, প্রধান ধর্মদেশক ভদন্ত এস লোকজিৎ মহাথেরসহ বিভিন্ন বিহার থেকে আগত পূজনীয় ভিক্ষুসংঘ, সরকারি ও বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সামাজিক ও সাংগঠনিক ব্যক্তিত্ব, ঢাকায় বিদেশি মিশনের ক‚টনীতিক ও সর্বস্তরের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।


সেনাপ্রধান বলেন, সব ধর্ম, ইসলাম-বৌদ্ধ-হিন্দু-খ্রিষ্টান, সবাই মিলে সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চাই। তিনি বলেছেন, অন্য যেসব ধর্ম আছে, সব ধর্ম, জাতি ও গোষ্ঠী সবাই মিলে সুন্দর বাংলাদেশ গঠন করতে চাই। এখানে সুন্দরভাবে শান্তিতে বসবাস করতে, দেশ ও জাতির উন্নতি করতে চাই।


বৌদ্ধধর্মের মূলমন্ত্র শান্তি ও স¤প্রীতি উলে­খ করে সেনাপ্রধান বলেন, হাজার হাজার বছর ধরে আমরা এখানে আছি, এটাই আমাদের ঐতিহ্য। সবচেয়ে পুরোনো ধর্ম হচ্ছে সনাতন ধর্ম, তারপরে বৌদ্ধধর্মের আবির্ভাব হয় আড়াই হাজার বছর পূর্বে, পরবর্তীতে খ্রিস্টধর্ম আসে এবং ইসলাম সবচেয়ে শেষে আমাদের দেশে আসে। এই প্রধানতম চার ধর্ম, আমরা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করতে চাই। একে অপরকে সাহায্য করব, সহমর্মিতা প্রদর্শন করব; কারও কোনো অসুবিধা হলে, বিপদে পড়লে সাহায্য করব। এভাবে একটা স¤প্রীতির একটি দেশ গড়ে তুলতে চাই। সবাই মিলে ভালো থাকতে, সুখে-শান্তিতে থাকতে চাই।  
0 Comments