বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪
২৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কোনো টাকা আত্মসাৎ হয়নি: দুদক

অনলাইন ডেস্ক | আপডেট: রবিবার, নভেম্বর ১০, ২০২৪

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কোনো টাকা আত্মসাৎ হয়নি: দুদক
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট’র কোনো টাকা আত্মসাৎ করেননি বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী আসিফ হাসান। ওই টাকা ট্রাস্টের ফান্ডেই রয়েছে বলে জানান তিনি।

রোববার সকালে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার খালাস চেয়ে করা লিভ টু আপিল শুনানি হয়।

শুনানিতে দুদকের আইনজীবী জানান, মামলার নথিপত্র অনুযায়ী দেখা যায় ট্রাস্টের দুই কোটি ৩৩ লাখ টাকা ট্রান্সফার হয়েছে; কেউ তা আত্মসাৎ করেনি।

এ সময় আদালতে এ মামলায় খালেদা জিয়ার দেওয়া ১৫০ পৃষ্ঠার জবানবন্দিকে ঐতিহাসিক দলিল উল্লেখ করে কিছু অংশ আপিল বেঞ্চের সামনে পড়ে শোনানো হয়। আদালতে খালেদা জিয়ার জবানবন্দিকে কবি নজরুলের রাজবন্দির জবানবন্দির সঙ্গেও তুলনা করেন আইনজীবী।

এদিকে এ মামলায় আগামীকাল লিভ টু আপিলের আদেশের দিন নির্ধারণ করেছে আপিল বিভাগ।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল জানান, কোনো অনিয়ম না হলেও কেবল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ২০১৮ সালে বিএনপি চেয়ারপারসনকে প্রথমে পাঁচ বছরের সাজা দেওয়া হয়। পরে খালেদা জিয়া আপিল আবেদন করলে হাইকোর্ট সাজা আরও পাঁচ বছর বাড়িয়ে ১০ বছর কারাদণ্ডের রায় দেন।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

আদালতে খালেদা পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া, ব্যারিস্টার সানজিদ সিদ্দিকী।

গত ৩ নভেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানির জন্য ১০ নভেম্বর দিন ধার্য করেন চেম্বার আদালত।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত। একইসঙ্গে এ মামলার অন্য পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অরফানেজ ট্রাস্টের নামে সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আখতারুজ্জামান।


একইসঙ্গে এই মামলায় খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানসহ মামলার অপর পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি ছয় আসামির প্রত্যেককে ২ কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

বাকি চার আসামি হলেন সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, সাবেক এমপি ও ব্যবসায়ী কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমান। এর মধ্যে পলাতক আছেন তারেক রহমান, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান।


এরপর বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া, কাজী সালিমুল হক কামাল এবং ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ। পরে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের  হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ-টু আপিল করেন খালেদা জিয়া।
0 Comments