শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কালো মাস্ক পরা একজন আগুন দেন শোভাযাত্রার ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতিতে

অনলাইন ডেস্ক | আপডেট: শনিবার, এপ্রিল ১২, ২০২৫

কালো মাস্ক পরা একজন আগুন দেন শোভাযাত্রার ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতিতে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষ্যে আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা মূল মোটিফে আগুন দেওয়ার ঘটনাটি ধরা পড়েছে সিসিটিভি ফুটেজে।  

ফুটেজ বিশ্লেষণ করে মুখে কালো মাস্ক পরা একজনকে আগুন দিতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন চারুকলা অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইসরাফিল রতন।

তিনি জানান, ওই ব্যক্তির পরনে ছিল জিন্স, মুখে কালো মাস্ক। তিনি ঠান্ডা মাথায় মোটিফটিতে আগুন দেন। তবে ওই ব্যক্তির পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।  

বর্ষবরণে আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা মূল মোটিফ ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’তে আজ ভোরে আগুন দেওয়া হয়েছে। এতে মোটিফটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম চঞ্চল জানান, ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতিকে টার্গেট করে আগুন লাগানো হয়েছে। ওই আকৃতি পুরোটাই পুড়ে গেছে। একইসাথে পায়রার অবয়বটাও পুড়ে গেছে। আনুমানিক ৪টা থেকে সাড়ে ৪টার মধ্যে আগুন লাগানো হয়েছে৷  

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ ফায়েজ তাইয়েব আহমেদ ফেসবুকে লিখেছেন— চারুকলায় পরিকল্পিত নাশকতার আগুনে ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে আমি সন্দেহ করি। এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চারুকলায় ফ্যাসিবাদের ডিপ রুটেড অ্যাসোসিয়েশন এখনো থেকে গেছে। এজন্য চারুকলার শিক্ষকদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার প্রয়োজন রয়েছে।  

চারুকলার শিক্ষার্থী আবির বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে আমাদের কাজ চলছিল। এমন ঘটনা ঘটতে পারে আমরা এটা চিন্তাই করিনি। টার্গেট করে ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতিটি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফ্যাসিবাদ চলে গেলেও তার দোসররা এখনো সক্রিয় রয়েছে। এটা তাদেরই কাজ নিঃসন্দেহে।

চারুকলার সাবেক শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান বলেন, আমরা গত একমাস ধরে এই প্রতিকৃতিটি তৈরি করতে কাজ করে আসছি। আমাদের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছিল। এই ধরনের প্রতিকৃতি ২/১ দিনে তৈরি করা যায় না। এ বিষয়ে এখন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আমাদের সন্দেহ পতিত সরকারের দোসররা এই কাজ করতে পারে।

চারুকলার এক শিক্ষার্থী বলেন, এটি নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছিল। আজকের মধ্যে এটির কাজ শেষ হয়ে যেত। এটা নিঃসন্দেহে ষড়যন্ত্র। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি কেউ ইচ্ছা করেই আগুন লাগিয়েছে। প্রশাসনের লোকজনও এর পেছনে জড়িত কি না খুঁজে বের করতে হবে। কারণ রাতে এখানে পুলিশের লোকজনও উপস্থিত ছিল।


প্রসঙ্গত, এ বছর বাংলা নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রায় জন্য বাঁশ-বেতের কারুকাজে তৈরি করা হয়েছিল এক দৈত্যাকৃতির “ফ্যাসিবাদী প্রতিকৃতি”, যার উচ্চতা ছিল প্রায় ২০ ফুট। যেখানে সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি মুখাবয়বের দুপাশে ছিল শিংয়ের মতো অবয়ব। প্রতিকৃতিতে ইতোমধ্যেই প্রলেপের কাজ শেষ হয়েছিল। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছিলেন, এটিই ছিল এবারের শোভাযাত্রার প্রধান মোটিফ বা অবকাঠামো।
0 Comments