রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাক ‘চক্রে’ বেকায়দায় ভারত?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | আপডেট: বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ৯, ২০২৫

পাক ‘চক্রে’ বেকায়দায় ভারত?

সব কিছু ঠিক থাকলে ২০৩০ সাল নাগাদ সংশ্লিষ্ট ক্ষেপণাস্ত্রটি হাতে পাবে পাক বায়ুসেনা। এই পরিস্থিতিতে গোদের উপর বিষফোড়ার মতো ইসলামাবাদকে ‘আরডি-৯৩এমএ’ নামের লড়াকু জেটের একটি ইঞ্জিন ‘বন্ধু’ রাশিয়া সরবরাহ করছে বলে খবর প্রকাশ্যে এসেছে। বর্তমানে চিনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ‘জেএফ-১৭ থান্ডার ব্লক থ্রি’ নামের সাড়ে চার প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরি করছে ইসলামাবাদ। ওই লড়াকু জেটে নাকি মস্কোর ইঞ্জিন ব্যবহারের পরিকল্পনা করছেন রাওয়ালপিন্ডির সেনা অফিসারেরা, যা নয়াদিল্লির উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

গত শতাব্দীতে আমেরিকার সঙ্গে ‘ঠান্ডা লড়াই’ চলাকালীন ‘আরডি-৩৩’ নামের একটি টার্বোফ্যান জেট ইঞ্জিন তৈরি করে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন। এর নির্মাণকারী সংস্থা ক্লিমভ। ১৯৭৪ সালে জন্মের পর বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধবিমানে এই ইঞ্জিনটির বহুল ব্যবহার করতে থাকে মস্কো। পরবর্তী সময়ে সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিন নির্মাণের লাইসেন্স পায় ভারতের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাণকারী সংস্থা ‘হিন্দুস্থান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড’ বা হ্যাল। বর্তমানে বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা ‘আরডি-৯৩এমএ’ এই ‘আরডি-৩৩’-এর উন্নত সংস্করণ বলে জানা গিয়েছে।

রুশ লড়াকু জেট মিগ-২৯, মিগ-৩৩ এবং মিগ ৩৫-এর মতো ‘মাল্টিরোল’ যুদ্ধবিমানগুলিতে রয়েছে ক্লিমভের ‘আরডি-৯৩এমএ’ ইঞ্জিন। এর মধ্যে প্রথম লড়াকু জেটটি ব্যবহার করছে ভারতীয় বিমানবাহিনী এবং নৌসেনা। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনটি চিনকে সরবরাহ করেছে মস্কো, যা শেনইয়াং এফসি-৩১ নামের যুদ্ধবিমান নির্মাণে কাজে লাগিয়েছে বেজিং। সূত্রের খবর, লড়াকু জেটকে বিদ্যুৎগতি দিতে ৯১.২ কিলো নিউটনের শক্তি জোগানোর ক্ষমতা রয়েছে ‘আরডি-৯৩এমএ’র।

যুদ্ধবিমানের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনটিকে সামরিক ড্রোনে ব্যবহার করার সুবিধা হয়েছে। রুশ ফৌজ যে ‘মিগ স্ক্যাট’ মানববিহীন হামলাকারী উড়ুক্কু যান ব্যবহার করে, তাতে আছে ক্লিমভের তৈরি ‘আরডি-৯৩এমএ’। তবে ইঞ্জিনটির ‘ড্রাই’ সংস্করণ সেখানে লাগিয়েছেন মস্কোর প্রতিরক্ষা গবেষকেরা, যার শক্তি ৫০ কিলো নিউটনের সামান্য বেশি বলে জানা গিয়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনটি হাতে পেলে পাক সেনার শক্তি কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

তবে ‘আরডি-৩৩’ ইঞ্জিনটির উন্নত সংস্করণের কিছু সমস্যা রয়েছে। লড়াকু জেট ওড়ানোর জন্য বেশি শক্তি উৎপন্ন করতে পারলেও কম সময়ের জন্য পরিষেবা দিয়ে থাকে ‘আরডি-৯৩এমএ’। এর জীবন মাত্র ২,২০০ ঘণ্টায় শেষ হয়ে যায় বলে জানা গিয়েছে। সেখানে পুরনো ইঞ্জিনটির চার হাজারের বেশি ঘণ্টা ধরে কর্মক্ষম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্লেষকদের একাংশের অনুমান, বর্তমানে ঘুরপথে এটি পাক সরকারের হাত তুলে দিচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

0 Comments