বাংলাদেশে শিক্ষা ব্যয়ের ৭১ শতাংশ অর্থ শিক্ষার্থীর পরিবার বহন করে। এনজিও স্কুলে ফি সরকারি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় তিনগুণ বেশি এবং বেসরকারি কিন্ডারগার্টেনের ক্ষেত্রে এই ব্যয় নয়গুণ বেশি।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে ইউনেস্কোর ‘গ্লোবাল এডুকেশন মনিটরিং রিপোর্ট ২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে শিক্ষা ব্যয়ের ৫৭ শতাংশ বহন করে পরিবার। নেপালে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষায় পরিবারের ব্যয় ৬৩ শতাংশ এবং কারিগরি-বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে পরিবার ব্যয় করে থাকে ৭৫ শতাংশ। যেখানে সরকারি কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে এই ব্যয় ৮ শতাংশ।
এছাড়া দুটি প্রধান শহরে শীর্ষ এক চতুর্থাংশ পরিবারের মাসিক ফি প্রদানের হার নিম্ন এক চতুর্থাংশ পরিবারের তুলনায় চার থেকে আট গুণ বেশি।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতে শীর্ষ ২০ শতাংশ পরিবার নিচের ২০ শতাংশ পরিবারের তুলনায় সরকারি, বেসরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এবং অনুদানবিহীন সব রকম স্কুলে প্রায় চারগুণ বেশি ব্যয় করে। ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে সরকারি স্কুলের তুলনায় বেসরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এবং অনুদানবিহীন স্কুলে পাঁচগুণ বেশি ব্যয় করেছিল পরিবার।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রায় ১২ শতাংশ পরিবার সঞ্চয় করে এবং ৬ শতাংশ পরিবার স্কুলের ফি মেটাতে ঋণ করে থাকে। বাংলাদেশে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পরিবার ঋণ করে বেসরকারি পলিটেকনিকে পড়াশোনার খরচ মেটায়।
ভুটান, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণকারীদেরকে স্বল্প সুদে ঋণ প্রদানের জন্য কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল। এছাড়াও বাংলাদেশে শিক্ষার্থীরা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি বৃদ্ধি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি এর ওপর কর আরোপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল। ফলস্বরূপ, কিছু সিদ্ধান্তের পরিবর্তনও হয়েছিল।
এই প্রতিবেদনের জন্য করা একটি জরিপে দেখা যায়, ভারতের ১ হাজার ৫০টি কম খরচের বেসরকারি স্কুলের মধ্যে ১ হাজারটি স্কুল শুধুমাত্র ফির উপর নির্ভর করে চলে।
অপরদিকে আফগানিস্তান, ভারত এবং নেপালের শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর ফি'র ওপর নির্ভরতা এবং সরকারি তহবিলের অভাবকে তাদের কর্মসূচির উন্নয়নে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হিসেবে মনে করে।