এম.এম হায়দার আলী
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে। ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পাশাপাশি। বর্তমানে সংগঠনকে মজবুত ও তৃণমূলের চাহিদাকে প্রাধ্যান্য দিয়ে। প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ে মনোনিবেশ করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। সাতক্ষীরাতেও তার ব্যতিক্রম নয়। এক সময়ের বিএনপি ও জামায়াতের ঘাঁটি খ্যাত সাতক্ষীরায়। গেল প্রায় ১৫ বছরে বর্তমান সরকারের নানামূখি দৃশ্যমান উন্নয়নের ফলে। এখন অনেকটাই সমৃদ্ধ হয়েছে আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক। আর এই কৃতিত্বের একমাত্র ধারক ও বাহক হলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য, সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সাতক্ষীরা-৩ আসনের বারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য, বিশ্ব বরেণ্য অর্থোপেডিক সার্জন অধ্যাপক ডা. আ. ফ. ম রুহুল হক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যান্ত আস্থাভাজন ডা. রুহুল হকের আপ্রাণ চেষ্টায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে সাতক্ষীরার উন্নয়নের দৃশ্য । যে কারণে জেলার অন্যান্য সংসদীয় আসনগুলোতে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীজট থাকলেও, সাতক্ষীরা-৩ আসনে এখনও পর্যন্ত অধ্যাপক ডা. আ. ফ. ম রুহুল হকের বিকল্প নেই বলে মনে করছেন। জনসাধারণ থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীন দলের তৃণমূল ও শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব দানকারীরা । এ আসনে বর্তমানে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ। আসনটি তৈরি হওয়ার পর থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন গুলোতে ৪ বার আওয়ামী লীগ, তিনবার জামায়াত ও একবার করে জাতীয় পার্টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জয় লাভ করেছেন।সাতক্ষীরা-৩ (দেবহাটা, আশাশুনি ও কালীগঞ্জ আংশিক) আসনে ২০০৮ সালে ডা. আ. ফ. ম রুহুল হক প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর । কেবল মাত্র তিনি নিজের নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নে সীমাবদ্ধ থাকেনি বরং কাঁধে তুলে নিয়েছেন ।অবহেলিত গোটা সাতক্ষীরা জেলার উন্নয়নের দায়িত্ব। গত ১৫ বছরে নিজ নির্বাচনী এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন, রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণের পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধি ও মাতৃত্ব কালিন ভাতা সহ শতভাগ ভাতা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছেন। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় ভাঙন কবলিত দেবহাটা, কালীগঞ্জ ও আশাশুনিতে নদী ভাঙনরোধে জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ মেরামত ও এলাকা ভেদে নতুন বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা করেছেন। ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় প্রাণহানী এবং ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা গুলোতে একের পর এক বহুমূখি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপনের ব্যবস্থা করেছেন। পাশাপাশি কর্মসৃজন প্রকল্প, টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও এডিপি’র মতো প্রকল্পের মাধ্যমে নির্বাচনী এলাকা তিনটি উপজেলার অবকাঠামোগত উন্নয়নে আমূল পরিবর্তন এনেছেন ডা. রুহুল হক। তাছাড়া মুজিববর্ষ ঘিরে অসংখ্য গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মাঝে জমিসহ সরকারি অর্থায়নে নির্মিত সেমিপাকা ঘর বরাদ্দ প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ভাবে বাস্তবায়নে তার ব্যাপক অবদান রয়েছে।বিশ্ব বরেণ্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকার সুবাদে গোটা সাতক্ষীরার স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন তিনি। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নের পাশাপাশি চোখে পড়ার মত উন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষকে কমিউনিটি ক্লিনিকমুখী করতেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। এছাড়া দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০শয্যায় উন্নীতকরণ, নলতায় ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) এবং ম্যাটস নির্মাণ, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ নির্মাণ সবই এসেছে ডা. রুহুল হকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় । আর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সাংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সাতক্ষীরায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মানে ডা. রুহুল হকের অক্লান্ত প্রচেষ্টা সম্প্রতি সাতক্ষীরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুমোদনে চুড়ান্ত সফলতা পেয়েছে। একসময় সাতক্ষীরায় বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ জেলাবাসির কাছে কল্পনাতীত থাকলেও, তা বাস্তবে রুপ দিয়েছেন ডা. রুহুল হক এমপি। নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই নির্বাচনী এলাকায় সভা-সভাবেশ, দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় এবং ছাত্র ও যুব নের্তৃত্বকে সুসংগঠিত করতে ডা. রুহুল হক এমপি সহ তার পক্ষে দলের নেতাকর্মীরা বর্তমান সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে নিয়মিত রাজনীতির মাঠে কাজ করছেন। সূত্রমতে, ২০১৩ সালে সদ্য প্রয়াত জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়কে কেন্দ্র করে । বিএনপি-জামায়াতের তান্ডবে অনেকটাই অশান্ত হয়ে ওঠে সাতক্ষীরার জনপদ। ঐ সময় প্রভাষক মামুন, আওয়ামী লীগ নেতা আবু রায়হান, আব্দুল আজিজ, আলমগীর হোসেন সহ বেশ কয়েক জন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকে নির্বিচারে প্রাণ দিতে হয়েছি। সেই বিভিষিকাময় দিনগুলি আজও দাগ কেটে আছে সাতক্ষীরার মানুষের মনে। সেই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সাতক্ষীরায় ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিকে ফের সুসংগঠিত ও স্বাভাবিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে। দিনরাত এক করে কাজ করেছেন ডা. রুহুল হক-এমপি। যে কারণে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সাতক্ষীরা-৩ আসনে তার বিকল্প কোন নের্তৃত্ব আজও ভাবতে পারেনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তবে ক্ষমতাসীন দলের হয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন, নর্দান ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর ড. ইউসুফ আবদুল্লাহ, আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম, দেবহাটার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. গোলাম মোস্তফা রয়েছেন হার্ড লাইনে করছেন গণসংযোগ। তবে ডা. রুহুল হক এমপি বলেন, ‘সংসদ সদস্য হিসেবে গত প্রায় ১৫ বছরে আমার নির্বাচনী এলাকা সহ সাতক্ষীরার মানুষের জন্য সাধ্য মতো উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছি। আগামীতে আরও উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে। ব্যক্তি ইমেজে বরাবরই ভোটারদের কাছে আমার জনপ্রিয়তা শীর্ষে রয়েছে। যে কেউ মনোনয়ন প্রত্যাশা করতে পারেন, তবে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ দলের মনোনয়ন বোর্ডের কাছে আমিই ‘সেরা’ বলে মনে করছি। মনোনয়ন পেলে দ্বিধা-দ্বন্দ ভুলে নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের জনগন তাদের মূল্যবান ভোট প্রদানের মাধ্যমে আমাকে পুনরায় এ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত করবেন বলে আমি দৃঢ় বিশ্বাসী’। একই সাথে ব্যক্তির চেয়ে দল বড় দলের সেই দেশ বড় নীতিতে রাজনীতি এবং মানব সেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করা প্রবীণ এই শান্তিপ্রিয় মানুষটিকে সাধারণ জনগণ আবারো এমপি হিসেবে দেখতে চাই।